এলপি গ্যাসের দাম অর্ধেকে নামল

এলপি গ্যাসের দাম অর্ধেকে নামল


বিশ্ববাজারে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দামে বড় ধরনের পতন ঘটেছেএলপিজি তৈরি হয় প্রপেন ও বিউটেন নামের গ্যাসের মিশ্রণেএই গ্যাস দুটির দাম এক মাসে কমে অর্ধেক হয়ে গেছে

এটি দেশের মানুষের জন্য সুখবরকারণ প্রচুর মানুষ এখন এলপিজি ব্যবহার করে রান্না করেআবার খাবার দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পরিবহনেও এলপিজি ব্যবহার করা হয়অবশ্য দেশে দর কমার বিষয়টি নতুন দামে গ্যাস আমদানি ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করেআবার এই পড়তি দর কতটা স্থায়ী হয়, সেটাও বিবেচ্য

এ অঞ্চলে এলপিজির দাম নির্ভর করে সৌদি আরামকো নামে পরিচিত সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানির নির্ধারিত দামের ওপরসৌদি আরামকো প্রতি মাসে এলজিপির একটি দাম ঘোষণা করেগতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরামকো প্রতি টন প্রপেনের দাম নির্ধারণ করেছে ২৩০ মার্কিন ডলার, যা আগের মাসে ৪৩০ ডলার ছিলঅন্যদিকে বিউটেনের দাম ঘোষণা করা হয়েছে ২৪০ ডলার, যা আগের মাসে ছিল ৪৮০ ডলার

বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো প্রায় ৩০ শতাংশ প্রপেন ও ৭০ শতাংশ বিউটেনের মিশ্রণে এলপিজি বাজারজাত করেদাম এভাবে কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে জ্বালানি তেলের বাজার নিয়ে রাশিয়া ও সৌদি আরবের দ্বন্দ্ব এবং করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক মন্দাকে দায়ী করা হচ্ছে

অবশ্য গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম বাড়ছিলআরামকোর তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের জন্য ঘোষিত প্রপেনের দাম ছিল টনপ্রতি ৫৬৫ ডলার, যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৫০ ডলারএর মানে হলো জানুয়ারি পর্যন্ত আগের পাঁচ মাসে প্রপেনের দাম ৬১ শতাংশ বেড়েছেএকইভাবে বিউটেনের দাম বেড়েছে ৬৪ শতাংশজানুয়ারিতে বিউটেনের দাম ঘোষণা করা হয়েছে টনপ্রতি ৫৯০ ডলার, যা গত সেপ্টেম্বরে ৩৬০ ডলার ছিলজানুয়ারির পর থেকে বাজার আবার কিছুটা পড়েছেবড় পতন হলো এপ্রিলের দামের ক্ষেত্রে

বিশ্ববাজার ধারাবাহিক বাড়ার পর দেশে কোম্পানিগুলো জানুয়ারি মাসে ১২ কেজির এক সিলিন্ডার এলপিজির দাম এক দফায় ২০০ টাকার মতো বাড়ায়জানতে চাইলে এলপিজি সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা এলপিজির মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মো. জাকারিয়া জালাল বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে মূল্য ১ হাজার ১০০ টাকা ছিলএরপরের দুই মাসে তা ২০০ টাকা কমিয়ে ৯০০ টাকায় আনা হয়েছেএখন আমরা পরিবেশকদের কাছে ৮৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি

কোম্পানিগুলো সাধারণত আমদানিমূল্যের কয়েক মাসে গড় ধরে দেশের বাজারমূল্য ঠিক করে, যাতে বিশ্ববাজারে হঠাৎ ওঠানামার ব্যাপক প্রভাব দেশের বাজারে না পড়ে

জাকারিয়া জালাল বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম কমেছেএটা সুখবরকিন্তু সেই কম দামের গ্যাস দেশে আনা এখন চ্যালেঞ্জেরআবার দেশে আনার পর মানুষের হাতে পৌঁছানো আরেকটি চ্যালেঞ্জকারণ কোনো পরিবেশক এখন ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পৌঁছাতে পারছে নাসরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিততিনি বলেন, বিশ্ববাজারে এই পড়তি দাম যদি টেকে এবং দেশে সরবরাহ করা যায়, তাহলে অবশ্যই ক্রেতারা সুফল পাবে

২০১৮-১৯ অর্থবছরের হিসাবে, দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল ৮ লাখ ২৫ হাজার টনজ্বালানি মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের হিসাবে, দেশে এলপিজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩৮ লাখ

Post a Comment

0 Comments