ইসলামে তাবলিগের গুরুত্ব অপরিসীম। যুগে যুগে, কালে কালে তাবলিগের দায়িত্ব পালন করেছেন পূর্ববর্তী সব নবী-রাসুল। সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ
নবী মুহাম্মদ (সা.)ও এ দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ ২৩ বছর। তাবলিগের তাৎপর্য বিশ্লেষণ
করে বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বলেন, ‘হে জনগণ! তোমরা যারা
উপস্থিত আছ, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণীগুলো পৌঁছে
দেওয়া।’
নবুয়তির ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ মিশন মুহাম্মদ
(সা.) এর হাতে পূর্ণতা লাভ করেছে। মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শের অনুসারীরা, বিশেষ করে খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়িন ও পরে বিভিন্ন সুফি-দরবেশ ও মুবাল্লিগরা ধর্ম প্রচারের
যে নজির স্থাপন করে গেছেন,
তা সত্যিকার অর্থে অসাধারণ। তাদের অব্যাহত নিঃস্বার্থ
মেহনতের ফলে মরক্কো থেকে চীনের প্রাচীর পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদ ইসলামের আলোকে
উদ্ভাসিত হয়। সাম্য,
ন্যায়পরায়ণতা ও ভ্রাতৃত্বের সুমহান ভিত্তিতে
আদর্শ সমাজ গড়ে ওঠে। নতুন সংস্কৃতি-সভ্যতার উন্মেষ ঘটে এবং একটি নতুন বিশ্ব অস্তিত্ব
লাভ করে। মুবাল্লিগদের মানবীয় মূল্যবোধ, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও সহমর্মিতাপূর্ণ গুণাবলি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর
মানুষকে একে অপরের কাছে নিয়ে আসে।
‘তাবলিগ’
শব্দের আভিধানিক অর্থ পৌঁছানো। পারিভাষিক অর্থে ইসলামের
মহান বাণী সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধসহ শরয়ি বিধিবিধান মানুষের কাছে পৌঁছানোকে
‘তাবলিগ’
বলা হয়। যিনি এ গুরুদায়িত্ব
পালন করেন, তিনি ‘মুবাল্লিগ’
নামে সমধিক পরিচিত।
তাবলিগ তথা দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব প্রতিটি
যুগে প্রতিটি আদর্শবান মুসলমানের ওপর অর্পিত। আদর্শ যতটা উন্নত ও
কল্যাণধর্মী হোক, তা আপনা-আপনি প্রসার লাভ করে না। অন্যদিকে প্রচারিত
ও প্রসারিত আদর্শকে ধরে রাখার উদ্যোগ না নিলে সত্যের বিকৃতি ঘটারও সমূহ আশঙ্কা থেকে
যায়। আদর্শের ধারণ ও পুনরুজ্জীবনের জন্য তাবলিগি ও দাওয়াতি কাজ অপরিহার্য। ইসলাম প্রচারধর্মী
দ্বীন। দাওয়াত ও তাবলিগ ইসলামের রক্ষাকবচ। বিশ্ববরেণ্য ইসলামি
চিন্তাবিদ আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) বলেন, ‘দাওয়াত ও তাবলিগ ইসলামের প্রাণশক্তি। এ চেতনাব্যঞ্জক কর্মতৎপরতা
যদি মুসলিম সমাজে লোপ পায়,
তাহলে মানুষ পশুত্বের পর্যায়ে নেমে যেতে বাধ্য
হবে।’
ভারতবর্ষে তাবলিগের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। আরব বণিক ও পীর-দরবেশদের
আগমন থাকলেও মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের ফলে আলেম, ধর্মপ্রচারক,
পির, আউলিয়া ও দরবেশদের
ভারতবর্ষে আগমন বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন স্থানে মসজিদ, খানকাহ ও মাদ্রাসা
গড়ে ওঠে। ইসলামের দাওয়াত নিয়ে তারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে লাহোরের
দাতা গাঞ্জবখশ, পাঞ্জাবের সায়্যিদ জালালুদ্দীন সুরখপোশ বোখারি, রাজস্থানের শায়খ হামীদুদ্দীন নাগুরী, মুলতানের শায়খ বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, পশ্চিম পাঞ্জাবের শায়খ ফরীদুদ্দীন গাঞ্জশকর, দিল্লির হজরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া, আজমীরের খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি, দাক্ষিণাত্যের শায়খ কামালুদ্দীর চিশতি, পানিপথের বু আলী শাহ কলন্দর, গুজরাটের শায়খ আবদুল
ওয়াহাব শাযলী, কাশ্মীরের সায়্যিদ আলী হামাদানী, বিহারের শায়খ শারফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানীরী, চট্টগ্রামের হজরত শাহ আমানত, সোনারগাঁয়ের শায়খ শারফুদ্দীন
আবু তাওয়ামা, বগুড়ার সাইয়্যেদ মাহমুদ মাহি সওয়ার, রংপুরের মাওলানা কারামাত আলী জৌনপুরীর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
এ পির-মাশায়েখের অব্যাহত দাওয়াতি তৎপরতার
ফলে ইসলামের সাম্য, ভ্রাতৃত্ব,
উদারতা ও পরমতসহিষ্ণুতার বাণী বর্ণভেদ প্রথা
ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। দলে দলে নির্যাতিত
হিন্দু ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বহু রাজা-মহারাজা, বিশেষ করে পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি রাজপুত পরিবার, মালবের রাজগড় রাজ্যের রাজা মুতী সিংহ, পানিপথের অমর সিংহ রাজপুত এসব সুফির দাওয়াতি তৎপরতার ফলে ইসলাম
কবুল করে ধন্য হয়েছিলেন। কালক্রমে এ উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান মুসলিম এলাকায় পরিণত হয়
সিন্ধু। মুহাম্মদ বিন কাসিমের পর ১০০ হিজরি সালে ওমর ইবন আবদুল আজিজ
(রহ.) সিন্ধু অঞ্চলের সব রাজা ও ঠাকুরের কাছে ইসলাম কবুল করার জন্য তাবলিগি পত্র পাঠিয়েছিলেন।
পত্রপ্রাপ্তির পর রাজা দাহিরের দুই ছেলে জয়
সিংহ ও চাচাসহ বেশিরভাগ রাজা ও ঠাকুর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। উমাইয়া খলিফা ওমর ইবন
আবদুল আজিজ (রহ.) জয় সিংহকে ব্রাহ্মণবাদের প্রশাসক নিযুক্ত করেন। পরে আব্বাসীয় আমলের
খলিফা মাহদী ক্ষমতায় আরোহণের পর সিন্ধুর গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ আঞ্চলিক প্রশাসকদের কাছে
ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে দাওয়াতিপত্র পাঠান। শ্রী রায় ও মহারাজা নামে পরিচিত দুজন শাসকসহ বহু মানুষ ইসলামে
দীক্ষা লাভ করেন। সিন্ধু অঞ্চলে রাজা, ঠাকুর ও সরকারি কর্মকর্তাদের
মধ্যে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে আরব বংশোদ্ভূত তাবেয়ি মুহাম্মদ আলাফী ও তার সহকর্মী, বিশেষ করে হামিম ইবন সামা শামীর বিশেষ অবদান রয়েছে। রাজা দাহিরের ছেলে
জয় সিংহকে ইসলামের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে এসব ধর্মপ্রচারক (মুবাল্লিগিন) ব্যাপক
প্রয়াস চালান (আবু যফর নাদভী,
তারিখে সিন্দ, পৃ. ৮৭,
১২৫, ১২৬, ১৬১;
হামিদ আল কুফী, চাচনামা,
পৃ. ৮৬; মুফতি মুহাম্মদ মুশতাক
তিজারভী, ব্যারে সাগীর মে ইশাআতে ইসলাম কী তারিখ, পৃ. ২৯-৬০)।
পরে দাওয়াত ও তাবলিগের ধারাবাহিকতায় যুক্ত
হন শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী (রহ.) এর বংশধর মাওলানা ইলিয়াছ (রহ.)। ১৯১০ সালে তিনি যখন
ভারতে তাবলিগি কার্যক্রম শুরু করেন,
তখন ঔপনিবেশিক রাজনৈতিক পরিপার্শ্বিকতায় ভারতীয়
উপমহাদেশের মানুষ ক্রমেই ধর্মবিমুখ হয়ে যাচ্ছিল। বিদেশি রাজশক্তির তোষণ
এবং ইংরেজদের সংস্কৃতির লালনকে গৌরব মনে করা হতো। দিল্লির পার্শ্ববর্তী
মেওয়াট থেকে তার এ মিশনের অভিযাত্রা। দুর্র্ধর্ষ তস্করদের জন্য এ এলাকার কুখ্যাতি ছিল ভারতজুড়ে। লুণ্ঠন ও উৎপীড়নের
মাধ্যমে গোটা এলাকায় তারা কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব। এমনকি মাঝে মধ্যে দিল্লিতে
পর্যন্ত তারা হামলা চালিয়ে হত্যালীলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে দ্বিধা করত না। সম্রাট গিয়াসউদ্দীন
বলবন (১২৬৬-৮৭ খ্রি.) রক্তপাত ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করেও সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের
অপতৎপরতা বন্ধ করতে পারেননি। তাবলিগি কার্যক্রমের ফলে মেওয়াটের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এখন সৎ ও
আল্লাহ ওয়ালা। পুরো অঞ্চলে বিরাজ করছে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি। মাওলানা ইলিয়াছ (রহ.)
উপলব্ধি করেন, ব্যক্তি চরিত্র সংশোধন করা না গেলে সামষ্টিক জীবন অপূর্ণ থেকে
যাবে। ব্যক্তিসত্তায় ইখলাস, তাকওয়া (আল্লাহভীতি)
ও পরকালীন জবাবদিহি সঞ্চার করা গেলে তা জীবনের সবক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যক্তিজীবনে যদি কেউ
আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে, তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রের
যে কোনো গুরুদায়িত্ব তার ওপর নির্দ্বিধায় ন্যস্ত করা যায়।
উপমহাদেশের বুজুর্গ ওলামা ও পির-মাশায়েখদের
সহযোগিতায় ক্রমান্বয়ে তাবলিগি জামাতের কার্যক্রম ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ইউরোপ, আমেরিকা,
অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকাসহ প্রসারিত হয়েছে গোটা দুনিয়ায়।
১৯৪৪ সালে মাওলানা আবদুল আজিজ (রহ.) এর প্রচেষ্টায়
তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে বাংলাদেশে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে চালু হয় ‘বিশ্ব ইজতেমা’। ১৬০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ ইজতেমা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম
মিলনমেলা। বাংলাদেশসহ গোটা দুনিয়ার দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এতে
ধর্মীয় উদ্দীপনা ও হৃদয়ের পবিত্র আবেগ নিয়ে যোগ দেন। ইসলামের আলোকে ব্যক্তি
চরিত্র গঠন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও তাঁর রহমত কামনা হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের
ভিত্তিতে পরিচালিত এ বিশাল আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কোনো বাজেট নেই, পোস্টার-ফেস্টুন নেই, বিজ্ঞাপন নেই। বিভিন্ন সংস্থা মুসল্লিদের
বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিশ্চিত করে নিরাপত্তা, যাতে কোনো অপরাধ সংঘটিত
না হয়। তালিম,
আম-খাস বয়ান, ছয় উসুলের বর্ণনা, দরসে কোরআন, দরসে হাদিস,
‘চিল্লা’ গঠন, জামাত প্রেরণ, ‘তাশকিল’ ও যৌতুকবিহীন বিয়ে বিশ্ব ইজতেমার উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের
প্রায় ৩০ লাখ মুসলমান এ ইজতেমায় যোগ দেন এবং ইজতেমা শেষে নিঃস্বার্থ মুবাল্লিগদের ছোট
ছোট গ্রুপ এক বছর, ছয় মাস,
তিন মাস ও ৪০ দিনের দাওয়াতি কার্যক্রম নিয়ে
বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে তাবলিগ জামাতের বৃহত্তর অংশ
ওলামা-মাশায়েখদের পরামর্শে পরিচালিত হচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক। এ পদক্ষেপ আরও আগে
নেওয়া উচিত ছিল। কারণ তৃণমূল পর্যায়ে এমন মুরুব্বিদের তত্ত্বাবধানে তাবলিগ জামাত
চলত, যাদের প্রাতিষ্ঠানিক দ্বীনি তালিমের পটভূমি নেই। ফলে তাদের আম বয়ান
ও খাস নসিহতে এমন কিছু বিষয় ফুটে ওঠে, যা বিপজ্জনক। যেমন ইসলামকে ছয় উসুলের
মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করা,
বিজ্ঞ মুফতি-মুহাদ্দিসের সামনে সাধারণ একজন
মুরুব্বি বয়ান করা, জিহাদের হাদিসগুলোকে দাওয়াতের মেহনতে প্রয়োগ করা, মাদ্রাসার প্রয়োজনীয়তাকে গৌণ মনে করা, তাবলিগকে দ্বীনের একমাত্র কাজ মনে করা, অন্যায়,
অসত্য ও জুলুমের বিরুদ্ধে টুঁ-শব্দ (নাহি
আনিল মুনকার) না করা ইত্যাদি। ইসলাম আল্লাহ তায়ালার মনোনীত দ্বীন। ইসলামের পরিধি ব্যাপক
ও বিস্তৃত। এক কথায় পূর্ণাঙ্গ জীবনদর্শন।
মহানবী (সা.) এর ২৩ বছরের নবুয়তি জীবন এবং
সাহাবায়ে কেরামের কর্ম ও জীবনাদর্শ উম্মতের জন্য উসওয়ায়ে হাসানা। একজন মোমিনের পক্ষে
হয়তো দ্বীনের সব শাখায় কাজ করা অসম্ভব। কিন্তু এক শাখায় কাজ করে এটাকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন মনে করা এবং
অন্য শাখাগুলোকে অস্বীকার করা রীতিমতো ভ্রান্তি ও বিচ্যুতি। প্রাজ্ঞ ওলামা-মাশায়েখের
নেতৃত্বের ফলে মাওলানা ইলিয়াছ (রহ.) এর সহি তরিকার ওপর তাবলিগ পরিচালিত হবেÑ এটাই জনগণের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা।
এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও
কানাডায় প্রতি বছর বড় পরিসরে,
তিন দিনব্যাপী তাবলিগি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে
থাকে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর
(Ethnic groups
in diverse society) দেশে তাবলিগি কাজ ব্যাপক
ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে ক্রমেই। দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গড়ে উঠছে নতুন
মসজিদ ও তাবলিগি মারকাজ। এভাবে চলতে থাকবে তাবলিগি কার্যক্রম কেয়ামত পর্যন্ত।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ওমর গণি এমইএস কলেজ, চট্টগ্রাম
*সূত্রঃ আলোকিত বাংলাদেশ
0 Comments